
কোচবিহার শহরে ডিএম অফিসের গেট নির্মাণ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রাস্তা আটকে কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এই নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া, যেখানে নির্মাণ কাজ হচ্ছে তার পাশেই রয়েছে ২০০ বছরের প্রাচীন মন্দির। এই অবস্থায় এই নির্মাণ কাজের বিরোধিতায় এবার সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। কোচবিহার সিভিল জজ আদালতে দায়ের হয় মামলা। মামলাকারীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী জানিয়েছেন, বিচারক জেলা শাসককে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলা থেকে সমস্ত পাকিস্তানিকে বিদেয় করুন! এই দাবি তুলেই এবার অভিযানে নামছে BJP
জানা যাচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত ১৫ মে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেদিন সকাল থেকেই কোচবিহার শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একাংশে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে শুরু হয়ে যায় খোঁড়াখুঁড়ি। পরে জানা যায়, ওই জায়গাটিতেই তৈরি হচ্ছে জেলা শাসকের অফিসের নতুন গেট। কোনও ধরনের সরকারি বিজ্ঞপ্তি বা স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনাই হয়নি বলেই দাবি করেছেন স্থানীয়রা। ১৬ মে বাসিন্দারা জেলা শাসকের দফতরে লিখিতভাবে আপত্তি জানান। এরপর ২২ মে ফের একবার আপত্তির চিঠি পাঠান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলার। তবে দুটি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, গেটের স্তম্ভ বসানোর জন্য যে দুটি জায়গায় খুঁড়ে গর্ত তৈরি করা হয়েছে সেগুলি বৃষ্টির জলে প্রায় উপচে পড়েছে। পাম্প বসিয়ে জল তোলা হচ্ছে এখন। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, এই কাজের একেবারে কাছেই রয়েছে ঐতিহাসিক হিরণ্যগর্ভ শিব মন্দির। ১৮০৭ সালে কোচবিহারের তৎকালীন মহারাজা শিবেন্দ্রনারায়ণের নির্মাণ করা এই মন্দির বর্তমানে হেরিটেজ সম্পত্তি হিসাবে স্বীকৃত।
খোঁড়াখুঁড়ির ফলে এর দেওয়াল বা মেঝেতে বড় ধরনের ফাটল তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার আপত্তি জানানোর পরও প্রশাসন কোনওরকম সাড়া দেয়নি। কাজ বন্ধ তো হয়নি, বরং নির্মাণ এখন ঢালাই পর্বে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতেই মামলার পথে হাঁটেন নাগরিকেরা। এই বিষয়ে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, নাগরিক স্বার্থ এবং ঐতিহাসিক স্থাপনার সুরক্ষার বিষয়টি পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে। প্রশাসনের একতরফা সিদ্ধান্তে শহরের ঐতিহ্য আজ বিপন্ন।