
ফের অশান্ত মণিপুর। সম্প্রতি সেই রাজ্যে মেইতেই সংগঠন আরামবাই টেংগোলের পাঁচ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই শনিবার রাতে ইম্ফলের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। এর জেরে পাঁচ দিনের জন্য উপত্যকার পাঁচটি জেলায় ভিস্যাট এবং ভিপিএন সহ ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডেটা পরিষেবা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর সরকার। শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, থৌবাল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিং জেলায় ইন্টারনেটে স্থগিতাদেশ জারি থাকবে।
এর আগে শনিবার রাতে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভের নামে আগুন জ্বলে। শহরের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক তাণ্ডব চলে। বিক্ষোভকারীরা টেংগোলের সদস্যদের মুক্তির দাবিতে কোয়াকিথেল এবং উরিপোকের রাস্তার মাঝখানে টায়ার এবং পুরানো আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই আবহে সরকারের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবাল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলায় বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে কিছু সমাজবিরোধী জনসাধারণের আবেগকে উস্কে দেওয়ার জন্য ছবি, ঘৃণামূলক বক্তব্য এবং ঘৃণামূলক ভিডিয়ো বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাইছে। এর জন্য ব্যাপকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা হতে পারে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ‘
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই একতরফাভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আদেশ অমান্যকারী কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ এদিকে মণিপুরের জেলাগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এসব এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’ তবে কোন নেতাকে আটক করা হয়েছে বা তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পশ্চিম ইম্ফলের কোয়াকিথেল পুলিশ ফাঁড়িতে উন্মত্ত জনতা হামলা চালালে দুই সাংবাদিক ও এক সাধারণ নাগরিক আহত হন। রাজ্যসভার সাংসদ লেইশেম্বা সানাজাওবাকেও ঘটনাস্থলে দেখা যায়, তিনি পরিস্থিতি নিয়ে ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন।
অসমর্থিত সূত্রে খবর, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) একটি দল ওই মেইতেই নেতাদের গ্রেফতার করেছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মীদের লেইশেম্বা বলছেন, ‘আমরা শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কঠোর চেষ্টা করেছি। এমন কাজ করলে শান্তি আসবে কীভাবে? বিধায়কসহ আমাকেও গ্রেফতার করুন…।’ এই আবহে রাজ্যের পরিস্থিতি যাতে আরও অগ্নিগর্ভ না হয়ে ওঠে, তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রশাসন।