
‘চিনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে (ডিল ডান)।’ দীর্ঘ টানাপোড়নের পর বড় ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় ৯০ মিনিট ফোনে কথা বলেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, চিনে যাওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক মহল বিষয়টিতে আশ্চর্য হয়েছিল কারণ কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্তও যুযুধান ছিল দুই পক্ষ। শুল্ক-যুদ্ধ চলছিল। কিন্তু বুধবার বড় ঘোষণা করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এই চুক্তির কথা প্রকাশ্যে আনেন ট্রাম্প নিজে। তিনি জানিয়েছেন, ‘চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন দারুণ জায়গায় রয়েছে। তবে এখনও এই সমঝোতা চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হবে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকেও।’ ট্রাম্প জানিয়েছেন, চিন এবার থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করবে গুরুত্বপূর্ণ চুম্বক ধাতু এবং বিরল খনিজ পদার্থ। এর বদলে চিনের পড়ুয়াদের জন্য খুলে যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা।
ট্রাম্প জানান, ‘আমরা পাচ্ছি মোট ৫৫ শতাংশ শুল্ক, চিন পাচ্ছে ১০ শতাংশ। সম্পর্ক চমৎকার!’ মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, দুই দেশ ‘জেনেভা ঐক্যমত্য’ বাস্তবায়নে কাঠামোতে পৌঁছেছে এবং এখন রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন-মেঘালয়কাণ্ড : রাজা খুনে অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে চড় ব্যক্তির
হোয়াইট হাউসের এক কর্তা জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা চিনা পণ্যে ৫৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করবে। অন্যদিকে, চিন আমেরিকান পণ্যে আরোপ করবে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক।চুক্তির মাধ্যমে বিরল খনিজ, আধুনিক প্রযুক্তি ও সেমিকন্ডাক্টর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক টানাপড়েন কিছুটা হলেও মিটবে। বিরল খনিজ পদার্থ আমদানির মাধ্যমে মার্কিন প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পে নতুন গতি আসতে পারে। আবার, চিনা পড়ুয়াদের জন্য মার্কিন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা খুলে গেলে দুই দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগও আরও মজবুত হবে।
আরও পড়ুন-মেঘালয়কাণ্ড : রাজা খুনে অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে চড় ব্যক্তির
মঙ্গলবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের কর্মকর্তারা জানান, দুই পক্ষ বাণিজ্য বিরোধে অগ্রগতির একটি কাঠামোতে সম্মত হয়েছেন। এর আওতায় চিন বিরল খনিজের রফতানিতে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেবে। তবে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য উত্তেজনার স্থায়ী সমাধানের আভাস খুব একটা নেই।লন্ডনে দুই দিনব্যাপী আলোচনার শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক বলেন, জেনেভায় গত মাসে যে সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছিল, এই কাঠামো চুক্তি তাতে বাস্তবতা যোগ করেছে।
চিনের বিরল খনিজ রফতানি নিষেধাজ্ঞার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সেমিকন্ডাক্টর সফটওয়্যার, বিমান ও বিভিন্ন পণ্যের চিনে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়, গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোতে জট তৈরি হয় এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়ে।