
গত মাসে চলন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে মহিলা চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। ঘুমিয়ে থাকার সময় সিধো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ওই চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় ১৫ দিনেরও বেশি সময় পর অবশেষে অভিযুক্ত অধ্যাপককে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে কলকাতার বাসভবন থেকে তাঁকে আটক করে বাঁকুড়া জিআরপি।
আরও পড়ুন: আরজিকরের গেটে আটকে গেল প্রতিবাদীদের মিছিল, শহরে ফের স্লোগান ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণী একে অপরের পূর্বপরিচিত ছিলেন। চিকিৎসকের দাবি, বিষ্ণুপুর স্টেশনের আশপাশে ট্রেন সফরের সময় অধ্যাপক তাঁকে যৌন নিগ্রহ করার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর তিনি পুরুলিয়া জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তদন্তের জন্য পাঠানো হয় বাঁকুড়া জিআরপি থানায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সোমবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁর ৬ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অভিযোগকারিণীর বক্তব্য, প্রথমে শুধু শ্লীলতাহানির চেষ্টার কথা জানালেও পরে পুরো ঘটনার গুরুত্ব বুঝে আদালতে বিস্তারিত বিবরণ জমা দেন। তিনি জানান, অভিযুক্ত তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদিকে, অভিযুক্তের আইনজীবীর মতে, তাঁর মক্কেলকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর দাবি, অভিযোগকারিণী প্রথমে এক কথা বললেও পরে তা পাল্টে দেন, যা সন্দেহজনক। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পুরুলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ও জেলার শিক্ষামহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
নির্যাতিতা চিকিৎসক জানান, হাওড়া- চক্রধরপুর এক্সপ্রেসের ফার্স্ট ক্লাস কোচে পুরুলিয়ায় যাচ্ছিলেন। সেই কোচেই যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। অভিযোগ, ঘটনার দিন ২৭ মে ভোরের দিকে যখন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন সেই সময় তাঁর শ্লীলতাহানি এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই অধ্যাপক। চিকিৎসকের অভিযোগ, ফার্স্ট ক্লাস কোচে এই ঘটনা ঘটে। ভোরের দিকে ঘুমিয়ে থাকার সময় অধ্যাপক তাঁর শরীরে হাত দেন এবং শ্লীলতাহানি করেন। ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যান্য সহযাত্রীদের জানান। তবে ছোটাছুটি করেও কোচের মধ্যে কোনও নিরাপত্তারক্ষীকে দেখতে পাননি। পরে তিনি জিআরপির কাছে অভিযোগ জানান। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে সেই ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপককে গ্রেফতার করল জিআরপি। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ জুন। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে জিআরপি।