
মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশীকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী সোনমকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উত্তরপ্রদেশ থেকে সোনমকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের এক ধাবা থেকে বাড়িতে ভিডিয়ো কল করে সোনম। আর সেটাই কাল হল। শেষপর্যন্ত একটিমাত্র ফোন কলই ধরিয়ে দিল সোনমকে।
জানা গিয়েছে, গাজিপুরের একটি ধাবা থেকে সোনমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ধাবার মালিক সাহিল যাদব নিজেই এই তথ্য দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সোনম গত রাতে তাঁর ধাবায় এসে বাড়িতে যোগাযোগ করার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনটি চেয়েছিল। সোনমকে কাঁদতে দেখে তিনিই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন বলেও দাবি ওই ধাবা মালিকের।
ওই ধাবা মালিকের কথায়, ‘রাত একটা নাগাদ ওই মহিলা কাঁদতে কাঁদতে আমার দোকানে আসে। ও বলে যে বাড়িতে ফোন করতে হবে। আমি ওকে নিজের ফোন দিই। এরপর ও বাড়িতে ফোন করে। আমি ওকে বসতেও বলি। তিনি একাই ছিল। এরপর আমি পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে চলে যায়৷’
সোনম ছাড়াও তিন ভাড়াটে খুনিকে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল গ্রেফতার করেছে৷ তাদের মধ্যে একজনকে উত্তরপ্রদেশ থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জনকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও একজন অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ।এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়ার নামও উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, সোনমের এই প্রেমিকই গোটা হত্যাকাণ্ডের ছক সাজিয়েছিল।
অন্যদিকে, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমাও এই মামলাটি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এক্স বার্তায় তিনি লিখেছেন, ইন্দোরের রাজা হত্যা মামলায় মেঘালয় পুলিশ বড় সাফল্য পেয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, মহিলা আত্মসমর্পণ করেছে এবং অন্য একজন অভিযুক্তকে ধরার অভিযান এখনও চলছে। এদিকে, মেঘালয়ের ডিজিপি আই নোংরাং বলেছেন, ইন্দোরের ওই ব্যক্তির হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী-সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোনমের কোনও আঘাত লাগেনি। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। বর্তমানে পুলিশ তাকে ইউপির গাজিপুরের ওয়ান স্টপ সেন্টারে রেখেছে।
ঘটনার সূত্রপাত
ইন্দোরের দম্পতি রাজা এবং সোনম ২২ মে মধুচন্দ্রিমার জন্য শিলং গিয়েছিল। ২৪ মে সোনম তার শাশুড়ির সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছিল। তারপর তাদের দুজনের ফোনই বন্ধ হয়ে যায় এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ১১ দিন ধরে খোঁজাখুঁজির পর পাহাড়ে রাজার মৃতদেহ পাওয়া যায়, তার হাতে ‘রাজা’ ট্যাটু দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়, কিন্তু সোনমের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজার ময়নাতদন্তে খুনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করে। পুরো মামলার তদন্তের জন্য একটি সিটও গঠন করা হয়। অবশেষে ১৭ দিন পর খোঁজ পাওয়া গেল সোনম রঘুবংশীর।